আমার বাচন ভঙ্গী মাঝে মাঝে একটু কড়া হয়ে যায় এজন্যে অনেক কথা ভালোবেসে বললেও অনেকে ধরতে পারেনা ভেতরে ভেতরে তাদের উপকারী কথা বলতেছি।
অনেক ভাইয়া আপু কে অনেক সময় বকাঝকা করি, মূল কারণ থাকে কনটেস্ট নিয়ে তাদের ভিতি। তারা যেসব কথা বলেন সেগুলোর প্যাটার্ণ গুলা মোটামুটি এরকমঃ
ক) আমি একদম বাচ্চা, কিচ্ছু পারিনা।
খ) কনটেস্ট করার মতো যোগ্যতা আমার নেই।
গ) কনটেস্ট নিয়ে আমি কিছু জানিনা, কিভাবে কি করতে হয়।
ঘ) আস্তে ধীরে এগোতে চাই, বড় হয়ে কনটেস্ট করবো।
ঙ) সব শিখে মাঠে নামতে চাই, এখন আমি সব শিখবো, গ্রাফ থিওরী থেকে ডিপি সব ইকুয়েশন আমি মুখস্থ করে ফেলবো, তারপর.......................
........
তো যাই হোক, আসুন কিছু ব্যাপার লক্ষ করিঃ
এই কথা গুলো আপনারা হাজার হাজার ব্লগে পেতে পারেন, তবু আমি আমার মতো করে একটু বলি....
আমাদের ব্রেইন অনেক সময়েই ডায়নামিক ওয়েতে কাজ করে, বেশিরভাগ ডায়নামিক ভাবে সব কিছু শিখে। অর্থাৎ কোনো নতুন পরিস্থিতিতে কিভাবে মানিয়ে নিতে হয় সেটা তাৎক্ষনিক ভাবে বিভিন্ন পদ্ধতি এপ্লাই করে বুঝার চেষ্টা করে, প্রথম বার ব্যার্থ হলেও পরের বার পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন টেকনিক উদ্ভাবন করে যাতে ক্রমান্বয়ে দক্ষতা বাড়ে। একবারেই যদি ব্রেইনে সব কিছু ইন্সটল করা থাকতো তাহলে আমাদের কথা বলা শিখা লাগতো না, সাইকেল চালানো বা সাঁতার শিখা লাগতো না। বাচ্চারা কথা বলা শিখে কিভাবে ? পানি কে আম বলেই, আমার চাচাতো বোন, আমার আব্বুর নাম মিন্টু, ও ডাকে পিন্তু তাতু বলে, আমাকে ভাইজান না বলে ডাকে "বাইদান" বলে; কিন্তু এরা কিন্তু কথা বলার চেষ্টা থেকে দূরে সরে নেই, বাচ্চারা কিন্তু বলেনা যে ওকে, আমরা সমস্ত বর্ণমালা শিখে, ব্যাকরণ শিখে, রবীন্দ্র নজরুল শিখে তারপর চাচু কে চাচু বলবো, ভাইজান কে ভাইজান বলবো।
সাইকেল চালানো শিখতে আমার একা একা লেগেছিলো তিন দিন, সেই তিন দিন আমি স্কুলে যাইনি, এরপর প্রথম প্রথম আমি এখানে ওখানে প্রচুর মেরে দিয়েছি, ট্রাকের তলায় ( স্থির ছিলো :P ) চলে গিয়েছিলাম একবার.. কেউ তো কখনো বলেনাই যে সাইকেলের স্পোক কাকে বলে, ক্র্যাংক বা গিয়ার বা বিয়ারিং বা টায়ার কোন রাবার দিয়ে তৈরী এগুলা না জেনে তোমার সাইকেল চালানো অবৈধ ?
আমি এখনো সাঁতার পারিনা ( কনফেশন ), কারণ আমি জানি আমি পানি তে যথেষ্ট সময় দেইনি, অথচ তরল গতিবিদ্যা, বয়েন্সি, সারফেস টেনশনের সব সূত্র আমার ঠোঁটের আগায় ছিলো.. কই ? সেসব সূত্র তো আমাকে সাঁতার শেখাতে পারেনি..
আপনি কি ছোটবেলায় আছাড় না খেয়ে হাঁটা শিখেছিলেন ?
থিওরী অফ রিলেটিভিটি, গ্রাভিটেশনাল পুল এন্ড থাগ, অথবা ফ্রিকশনের সমস্ত ইকুয়েশন আপনার মুখস্থ ছিলো সেগুলো এপ্লাই করে হাঁটা শিখেছিলেন ? না, আপনি বারবার পড়ে গিয়েও উঠে দাঁড়িয়েছেন, নিজের শরীর কে ডায়নামিক্যালি ব্যালান্স করা শিখেছেন, সেই আপনি এখন হাত ছেঁড়েই সাইকেল চালান.. তাই তো ?
.....
যাই হোক, অনেক উদাহরণ দিলাম, এখন আসেন এগুলা রিলেট করি।
আপনি যখন প্রথম কনটেস্টে প্রথম কোনো সাবমিশন দিবেন, আপনার কোড দেখে জাজ রা হাসবে, কারণ আপনি বারেবার ইনপুট না নিয়ে একবারই নিয়েছেন, বা হয়তো নিউ লাইন প্রিন্ট করেন নাই, বা আপনি হয়তো ইনপুট না নিয়ে কাজ কম্ম শুরু করে দিছেন.. বাট বিলিভ মি, তারা আপনাকে দমিয়ে দিবেনা, ছোট বাচ্চার আধো আধো কথাও সবাই মন দিয়ে শোনে, সেই ইনফ্যান্সির একটা স্পেশ্যাল সুইটনেস আছে, সেই জাজ রা জানে এই আধো আধো কথার বাচ্চাটাই একদিন কবিতা লিখবে, একদিন গান লিখে স্টেজ কাঁপাবে, একদিন এই বাচ্চার ভাষণে লক্ষ মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করবে, আপনার কি কনটেস্ট করে এখনি কীবোর্ড ফাঁটিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছেনা ? What are you waiting for ?
মাঠে নামলে আপনি দেখবেন প্রতিদিন আপনি নতুন কিছু শিখছেন, প্রথম দিন হয়তো কোডফোর্সেসের প্রথম প্রবলেম টা সলভ করতে ১ ঘন্টা ১০ মিনিট লাগবে.. পরদিন লাগবে ৩৫ মিনিট, এরপরে ১০। একসময়ে ৩ মিনিটেই প্রথম টা সলভ হয়ে যাবে, আপনি পরের প্রবলেমে মুভ করবেন, অন্য দের কোড হ্যাক করবেন, কেউ হ্যাক করতে চাইলে ডিফেন্ড করবেন, যুদ্ধ জমবে, আপনার কি রক্ত গরম হয়ে যাচ্ছেনা ? উত্তেজনায় নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসছে না ??
...........
কি হবে সলভ না করতে পারলে ? মরে যাবেন ? ফাঁসী দেওয়া হবে ? বন্ধুবান্ধব লজ্জা দিবে ? ওকে, কনটেস্ট কইরেন না। তিন বছর পরে যখন দেখবেন সবাই ১ ঘন্টার মধ্যে ৩/৪টা প্রবলেম সলভ করে ফেলছে, আপনি একটা হ্যান্ড মাইক কিনে এনে বলে বেড়িয়েন "আমি এখনো শিখছি"........
vai valo silo :D
উত্তরমুছুনএই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।
উত্তরমুছুনvalo laglo vai post ta
উত্তরমুছুনvalo likhcen bhai :)
উত্তরমুছুন(y)
উত্তরমুছুনgood..............
উত্তরমুছুনwow *__*
উত্তরমুছুনgood....
উত্তরমুছুনভাই ভাল লাগছে।।
উত্তরমুছুনভালো লাগছে ভাই............। শুরু করতে হবে...।
উত্তরমুছুন